নীলফামারী: পুলিশ পরিচয়ে ইজিবাইকসহ দুইজনকে অপহরণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে তিন নারীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে নীলফামারী সদর পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নীলফামারী পৌর শহরের কুখাপাড়া ধনীপাড়া এলাকার জাহেদুল ইসলাম (৬২), তার স্ত্রী বানু বেগম (৫০), তার দুই মেয়ে হাবিবা আক্তার বৃষ্টি (২৬), স্বর্ণা আক্তার (১৮), একই এলাকার এজাজুল ইসলাম (২২), লাইম ইসলাম (২০) ও নাঈম ইসলাম (১৯)।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে আদালতে মাধ্যমে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার পলাশবাড়ী পটুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা তার ভাতিজা রহিম বাদশা (৩০) ও ইজিবাইক চালক লাল মিয়ার (২৮) মাধ্যমে জেলা শহরের বিভিন্ন দোকানে বেকারির মালামাল পৌঁছানোর কাজ করান। ঘটনার দিন সোমবার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের কাছে বেকারির মালামাল নির্ধারিত দোকানে দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চান। তখন তারা তাকে কান্নাকাটি করে বলেন, আমাদের রক্ষা করেন। তখন তিনি ভাতিজার কাছে ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তার ভাতিজা তাকে জানায়, দুইজন মেয়ে তাদের ইজিবাইকে করে কালীতলা ক্যানেলের রাস্তার পার্শ্ব থেকে সাইফুন হাজী মার্কেট বাজারে যাইতে চান বলে ইজিবাইকে উঠে বসেন। তাদের কথা মতো ক্যানেলের রাস্তা দিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর ক্যানেল সংলগ্ন খালুয়ার ব্রিজে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে অজ্ঞাত ১৪/১৫ জন মিলে তাদের ইজিবাইকের পথরোধ করে পুলিশের পরিচয় দিয়ে মারধর শুরু করেন। পরে তাদের কাছে থাকা বেকারির মালামাল বিক্রির নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন।
একপর্যায়ে গোলাম মোস্তফার কাছে ভাতিজার ফোন করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বলেন, তোমার লোককে বাঁচাইতে চাইলে এখনই তার বিকাশ ও নগদ নম্বরে একলাখ টাকা পাঠালে অটোরিকশাসহ তাদের ছেড়ে দেব। এরপর গোলাম মোস্তফা তার ভাতিজা রহিম বাদশার বিকাশ নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা পাঠালে চাহিদা মোতাবেক টাকা না পাঠানোয় ভুক্তভোগীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আরও মারধর করতে থাকেন অপহরণকারীরা। এ সময় মারধরের শব্দ শুনানো হয়।
এদিকে পরিবারের লোকজন মিলে ঘটনাস্থলের আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের সন্ধান শুরু করে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে বিষয়টি সদর থানায় জানিয়ে রাতেই একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে পুলিশ সদরের চাঁদের হাট, হাতীবান্ধা, বাদিয়ার মোড়, ক্যানেল, পাঁচমাথা, কালীতলা ও হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে ও অপহরণের শিকার ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে দুইটি মোটরসাইকেল, একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও ছয়টি মোবাইল ফোন জব্দ করে পুলিশ।
নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, মামলার পরেই রাতেই অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়